ওগো ও কিশোরী মেয়ে....

বুধবার, ১২ মার্চ, ২০১৪

ওগো ও কিশোরী মেয়ে____
ঐ দূর হতে চঞ্চল চোখে কার পানে থাকো চেয়ে ?
দুরু দুরু বুক খেয়ালী হাওয়ায় থেকে থেকে কেঁপে ওঠে,
মেঘের মিতালি খোলা চুলগুলি রাঙা ঠোঁটেতে পুষ্প ফোটে।
ব্যকুল হৃদয়ে বারে বারে ডাক কারে তুমি এত বারে ?
কার ছায়া তুমি দেখেছ জলে হৃদয় নদীর ধারে।
কে সাথী গো তোমার, কারে দেখ তুমি স্বপ্নে বিভোর হয়ে?
সে কি দেবে দেখা ভেঙ্গে ব্যকুলতা, দেবে কি তোমায় ছুঁয়ে?
নাকি নিশিদিন স্বপ্নে বিলীন হবে তুমি পুড়ে ছাই ,
ব্যথার বাঁধনে কারে বাঁধ তুমি কিযে তার পরিচয়?
সে কি প্রিয় হয়ে জীবনের পথে চলবে হাতটি ধরে ?
নাকি পথিকের বেশে অচেনা হয়ে-যাবে-আনপথে পথ ভুলে?

জানো না কিছুই তুমি____
তবু কেন আঁক চোখেতে তোমার গোধূলির বেলাভূমি।
রংধনু আঁকা রঙ্গিন আকাশ কেন খুঁজে ফের মিছে?
কেন একা একা বাসর সাজাও হৃদয়ের তটনীতে ।
ভোরের কোমল পুষ্প ছুঁয়েছ, ভেবেছ স্বপ্ন মাখা,
বোঝনিকো তুমি জীবনের পথ কতটা গরল বাঁকা।
বয়ে যায় বায়ু, খেলা করে রোদ, মেঘ হাসে চুপি চুপি,
নিশিদিন তুমি পড়ে যাও শুধু রাঙ্গা-প্রেম-স্বরলিপি ।
গেঁথে যাও মালা এ-বেলা ও-বেলা সারাবেলা সারাক্ষণ,
বেঁধে যাও বুক অজানা আশায় পেতে শুধু অনুক্ষণ।
স্বপ্ন আকাশে ডানা মেলে যাও ঐ দূর ছায়াপথে,
না জানি কোথায় হারিয়ে যে যাও, খুঁজে ফের আঁখিপাতে।

অবুঝ মনের তীরে____
না জেনে কেন ডেকে যাও ফের, কেন চাও ফিরে ফিরে?
উদাসিনী হয়ে চেয়ে রও কেন আঁধার গগণ পানে,
শুধু সাথী হয় রাতি জোনাকিরা, কথা কয় কানে কানে।
ওগো ও কিশোরী, মেঘবতী পরী কেন থাক তুমি জেগে?
কেন খোঁজ নীড় ঐ সে সুদূর আকাশের মেঘে মেঘে।
হিমেল বাতাস, চুপকথা ঘাস খেলা করে শিশিরেরা,
ভেবে ভেবে কেন ভাবনা আকাশে ডানা মেলে দিশেহারা।
রাত জাগা পাখি গেয়ে যায় গান বিরহ ব্যথার সুরে,
সেই সুরে কেন হও বেসামাল আপনা অন্তঃপুরে।
ঝিঝি পোকা ডাকে ঝিম ধরা সুরে, ডাহুকেরা দেয় ডাক,
কেন বল কথা কখনওবা একা, কখনওবা নির্বাক।

ব্যথা করে ওঠে চোখ_____
আঁধার এসেছে অন্ধ হয়ে আলোকিত দিবালোক।
তবুও তুমি চেয়ে আছো কেন এই সে শূন্য পথে?
হেথা চোরাবালি মরিচিকা শুধু কূলে কূলে বাঁকে বাঁকে।
কেন থাক তুমি আশায় আশায় স্বপ্নতে বুক পেতে,
কেন ভেসে যাও ভাঙ্গা তরী হয়ে উদাসী আবেগি স্রোতে?
এতো ঘোর লাগা সময় তোমার, অঘোর ঘোরের ঘোর,
ভুলে গেছ ঐ সাঁঝের বেলায় বন্ধ হয়েছে দোর।
ধূপ জ্বেলে তুমি বসিছ পূজায়, কামনা শুধু যে তার,
এতো বন্দনা, এতো প্রার্থনা, নিশিদিন একাকার।
তবুও সে দূরে, দূর বহু দূরে হয়তো হবে না দেখা,
কেটে যাবে দিন খুঁজে খুঁজে কেঁদে ভীরু হয়ে একা একা।

হয়তোবা পাখি হয়ে____
গেয়ে যাবে একা দুঃখ সুখের বিরহের গান গেয়ে।
শাঁখে শাঁখে তুমি খুঁজে যাবে তারে যে চির উদাসী একা,
মিনতির সুরে ডেকে যাবে তুমি যদি হয় ফের দেখা!
পালক ডানায় ক্লান্ত বাতাস যদি বলে ফিরে এসে,
কি পেলে তুমি ? সর্ব হারায়ে একা একা ভালবেসে ।
কি করে বোঝাবে তারে তুমি বল, আছে কোন উত্তর?
উঠবে না কেঁপে, বুক ফেঁপে ফেঁপে- তোমার কণ্ঠস্বর ?
শুকনো বৃক্ষের মৃত ডালে যদি সবুজের দেখা পাও,
তবে তারে খুঁজো আলোতে আঁধারে, রক্তিম জোছনায়।
যদি পাখি হও ফিরে এসো নীড়ে, দেখ সন্ধ্যা নামিছে ঐ,
বনের গহীনে আঁধারের বুকে রবে তুমি বল কই?

ফুলের মতন করে____
যদি ফোট তুমি কোমলতা নিয়ে লাজে রাঙা প্রতি ভোরে।
যদি গন্ধ বিলায়ে পেতে চাও তারে ভ্রমরের মত করে,
আসিবে কি সে শুভ্র সকালে ফোটা ফুল প্রান্তরে?
প্রজাপতি হয়ে আসিবে কি সে তোমার মৌ-এর ঘ্রানে ?
ছুঁয়ে যাবে রেণু পরাগের ঐ উষ্ণ কোমল প্রানে?
নাকি ঝরে যাবে পূজার ডালিতে উৎসর্গ ভগবানে?
নাকি দলিত হবে অনাদরে শুধু পথিকের পদতলে?
কত ফুল কত নীরবে ঝরেছে গভীর আবেগে কেঁদে,
রাখেনি হিসেব ভুলো মাটি এই ধুলো মাখা পথ বাঁকে।
কেন তবে কাঁদ শিহরের পানে বিরহের সাথী হয়ে,
মাতাল হাওয়ায় গন্ধ ছড়ায়ে একা একা কথা কয়ে।

অথবা নদীর মত____
বয়ে যাও যদি দুলে যাওয়া জলে, ফুলে ওঠা ঢেউ শত-
যদি নিরুদ্দেশের পানসী ভাসাও তোমার বহতা বুকে?
যদি চলে তা ছেঁড়া পাল তুলে বাতাসের তালে ধুঁকে-
যদি নিরুপায় মাঝি গেয়ে ওঠে গান বিরহের সুর লয়ে,
তারে তুমি বোল ফিরে এসো তীরে শত ব্যথা দুখ ভুলে।
যদি ছলছল জল উতলা হয়ে দুপারের পাড় ভাঙ্গে?
কি করে ভিড়াবে ভাঙা তরী ঐ যা ভাসে জলে অকারনে।
ঝরা পাতা যদি ভাসাও বুকেতে আমার অন্বেষণে,
তবে জেনে নিও বৃথা হবে তা অতল সংগোপনে।

3 মন্তব্য(গুলি):

মোঃ খালিদ উমর বলেছেন...

সুন্দর সাজিয়েছেন এবং তার সাথে চমতকার সব লেখালেখি। আপনি খুব পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ বুঝতেই পারছি আপনার কর্ম দেখে।
ভাল থাকুন নিরন্তর

mohakalerproticchobi বলেছেন...

ধন্যবাদ খালিদ ভাই। আমার ব্লগ বাড়িতে এসেছেন দেখে ভালোলাগা জানবেন।

মহাকালের প্রতিচ্ছবি বলেছেন...

ধন্যবাদ খালিদ ভাই। আমার ব্লগ বাড়িতে এসেছেন দেখে ভালোলাগা জানবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন